বিশেষ প্রতিনিধি।। একাত্তরে খুলনার চুকনগরে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে শুক্রবার (২০ মে) সন্ধ্যায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে এক দিনে এত লোককে হত্যা করার ঘটনা আর কোথাও ঘটেনি। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুকনগর গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। খুলনার চুকনগরে একই কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
জেনারেল এরশাদের শাসনামলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে অষ্টম সংশোধনী হিসেবে রাষ্ট্রধর্ম বিল উত্থাপনের প্রতিবাদে ১৯৮৮ সালের ২০ মে ধর্মীয় বৈষম্যবিরোধী মানবাধিকারের আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গঠিত হয়। আবার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে একই দিনে পাকিস্তানি হানাাদার দখলদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসরদের নিয়ে খুলনার চুকনগরে দশ হাজারেরও বেশি বাঙালিকে হত্যা করে।
শহীদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক। এ্যাড. সুব্রত চৌধুরী, কাজল দেবনাথ, নির্মল রোজারিও, যোশেফ সুধীন মন্ডল, এ্যাড. রানা দাশগুপ্ত, মনীন্দ্র কুমার নাথ, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, রমেন মন্ডল, পদ্মাবতী দেবী, সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এ্যাড. কিশোর রঞ্জন মন্ডল এ্যাড, শ্যামল কুমার রায়। বিকেল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে মিছিল এসে শহীদ মিনারে মিলিত হয়। সন্ধ্যার আগেই পূর্ণ হয়ে যায় শহীদ মিনার চত্বর। প্রায় অর্ধ সহ¯্র প্রদীপ জ্বালানো হয় শহীদ স্মরণে।
অনুষ্ঠানের সূচনায় চুকনগরের শহীদসহ মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বক্তারা বলেন, দেশে একাত্তরে গণহত্যার নিদর্শন বহু গণকবর রয়েছে, যা এখনো অনাবিষ্কৃত আছে। এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের আরও কাজ করতে হবে, সরকারকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে হবে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না। বক্তারা আরও বলেন, গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের সব দোসরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতারও প্রয়োজন আছে।